বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় পাঁচ মাস বসয়ী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসারত অবস্থায় ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ করেন শিশুটির পরিবার।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে তানভির আহমেদ নামে পাঁচ মাস বয়সী শিশু নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে শিশুটির পরিবার শিশু ডাক্তার এনামুল হককে প্রাইভেটে দেখালে তিনি ওই শিশুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশনা দেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ডাক্তার এনামুল হকের দেওয়া চিকিৎসাপত্র না দেখে অন্য আরেকজন ডাক্তারের চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করেন কর্তব্যরত নার্সরা।
শিশুর অবস্থা অবনতি হতে দেখলে শিশুটিকে কোনো রকমের উন্নত চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ করেন পরিবার। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতে রেফার করার সময় শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।
শিশুটির বাবা শফিনূর মিয়া বলেন, আমি মঙ্গলবার ডা. এনামুল হকের কাছে আমার ছেলেকে দেখাই। তিনি আমার ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে তাই তাকে হাসপাতালের ভর্তি করার কথা বলেন। কিš‘ আমার ছেলেকে ভুল চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নার্সরা ডা. এনামুল হকের চিকিৎসাপত্র না দেখে ডা. সামিউল হকের চিকিৎসাপত্র দেখে অন্য শিশুর চিকিৎসা আমার ছেলেকে দেওয়া হয়েছে এবং তারা ওই সামিউল হকের চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী আমার ছেলেকে সিলেট রেফার করেন। ঐসময় আমি রেফার কফিতে ডা. এনামুলের নামের পরিবর্তে ডাক্তার সামিউলের নাম লেখা দেখতে পাই। তাদেরকে আমি তখনই জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান ডাক্তার সামিউলের নির্দেশীকা অনুযায়ি তারা আমার ছেলেকে চিকিৎসা দিয়েছেন। আমার ছেলেকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এঘটনায় শিশুটির মা তারাবুন বেগম বলেন, আমার বা”চাটা গতকাল রাত থেকেই কষ্ট করতেছে। আমি মাঝরাতে নার্সকে অনেকবার ডাক দিলেও ওই নার্স আমাকে খুব বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি কিছু করতে পারবেন বলে ওই সময় সাফ জানিয়ে দেন। কিš‘ আজকে তাদের কারণে আমার পাঁচমাস বয়সী শিশুকে মারা গেলো। আমি আল্লাহ কাছে এর বিচার দিলাম।
এঘটনায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে বিক্ষোভ করে নিহত শিশুর পরিবার। এসময় তারা চিকিৎসক ও নার্সসহ এই কর্মকা-ে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ বলেন, আমরা এই ঘটনায় তাৎক্ষনিক ওই সময়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি। ওই ঘটনায় ডা. বিশ্বজিৎ গোলদারকে প্রধান করে তিন সদস্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় যদি কোনো ডাক্তার বা নার্স জড়িত থাকেন তাহলে তাঁকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আসতে হবে।
Leave a Reply